পরিবেশ রক্ষায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সম্পৃক্ত করার তাগিদ 

বাংলাদেশ নেচার এন্ড এনভায়রনমেন্টাল কাউন্সিল (বিএনইসি) পরিবেশ রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সম্পৃক্ত করার কথা বলেছেন। সেই সাথে সংস্থাটির পক্ষ থেকে আরো বলা হয়েছে, পরিবেশ রক্ষায় হাইকোর্টের যে নির্দেশনা রয়েছে তা যথাযথভাবে পালন করা হয়।  

পরিবেশ রক্ষায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সম্পৃক্ত করার তাগিদ 

বাংলাদেশ নেচার এন্ড এনভায়রনমেন্টাল কাউন্সিল (বিএনইসি) পরিবেশ রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সম্পৃক্ত করার কথা বলেছেন। সেই সাথে সংস্থাটির পক্ষ থেকে আরো বলা হয়েছে, পরিবেশ রক্ষায় হাইকোর্টের যে নির্দেশনা রয়েছে তা যথাযথভাবে পালন করা হয়।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে এক মানবন্ধনের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি সাইফুর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ গবেষক অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন। বক্তব্য রাখেন সমূদ্র পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এসএম আতিকুর রহমান, সেভ আওয়ার সি’র মহাসচিব মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক, বাংলাদেশ মফস্সল সাংবাদিক এসোসিয়েশনের মহাসচিব আবু হানিফ প্রমুখ। 
 
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, সারা পৃথিবী জুড়েই পরিবেশ ধ্বংসের মহোৎসব চলছে। পৃথিবীর ফুসফুস আমাজান বন ধ্বংস করা হচ্ছে। প্রাণের সবচেয়ে বেশি অবস্থান সাগর আজ দূষিত হচ্ছে। যে কারণে আজ আমরা অক্সিজেন সংকটে ভূগছি। সাম্প্রতিক ভারতের দিকে তাকালে তার বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যায়।

তিনি আরো বলেন, আজ আমরা যে জ্বলোচ্ছাসসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছি- এ জন্য আমরাই দায়ী। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, স্থল ও সাগরে যে দুর্যোগ সৃষ্টি হয় তা মূলত আমাদের হাতের কামাই। সুতরাং আমাদের হাত যদি পরিবেশ ধ্বংসের ক্ষেত্রে সংযত না হয় ভবিষ্যতে আরো দুর্যোগ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। 

বিএনইসি’র সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের জীববৈচিত্র ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে। জীবন যাপনে খাদ্যসহ প্রায় সবকিছুতেই প্রাকৃতিক পরিবেশের পরিবর্তে কৃত্রিমতায় অভ্যস্ত হওয়ায় মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শরীরের শক্তি কমে যাচ্ছে। অক্সিজেন স্বল্পতায় আমাদের ভূগতে হচ্ছে। পরিবেশ যে অবস্থায় থাকা দরকার সে অবস্থায় রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সম্পৃক্ত করতে হবে। 

তিনি আরো বলেন, ইটভাটার বায়ু দূষণ, জাহাজভাঙ্গা শিল্প, শহর ও কলকারখানার বর্জ্য পদার্থের মাধ্যমে পরিবেশ ব্যাপকভাবে বিপর্যয় হচ্ছে। যদি আপনার একটি গাছ কাটার প্রয়োজন হয়, তা পরিবেশ আইন মেনেই করতে হবে। কারখানার পানি যেখান থেকে নেয়ার জন্য অনুমোদন রয়েছে সেখান থেকেই আপনাতে নিতে হবে। ভূগর্ভস্থ পানির মাধ্যমে কারখান চালানো হলে আমাদের ভবিষ্যতে অন্ধকারে পর্য বসিত হতে বাধ্য। সুতরাং পরিবেশ রক্ষায় হাইকোর্টের যে নির্দেশনা রয়েছে তা যথাযথভাবে পালন করতে হবে আমাদের নিজেদের এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের সুস্থ জীবন যাপনের স্বার্থেই। 

সমূদ্র পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এসএম আতিকুর রহমান, সুন্দর এই পৃথিবী ক্রমেই অসুস্থ হচ্ছে। এই অসুস্থতার নামই হচ্ছে ক্লাইমেট চেঞ্জ। অমরা নদী দূষণ করছি, পাহাড় কাটছি, উপকূলের ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করছি, কোরাল রিফ নষ্ট করছি। সব মিলিয়ে পরিবেশ ধ্বংসের মহোৎসবে নেমেছি। এই বছরের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্যকে অর্থবহ করতে হলে পরিবেশ আইন পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে হবে। বাংলাদেশ ন্যাচার এন্ড এনভায়রনমেন্টাল কাউন্সিলকে গঠনমূলক প্রোগ্রাম দিতে হবে এই বাংলাদেশের ভবিষ্যত প্রজন্মকে বাঁচার স্বার্থেই। 

সেভ আওয়ার সি’র মহাসচিব মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক বলেন, উন্নত দেশগুলো শিল্প বিপ্লবের নামে পরিবেশকে ধ্বংস করেছে। তারাই ক্লাইমেট চেঞ্জ নামক শব্দটির উৎপত্তি করেছে। উন্নত বিশ্ব তাদের দেশের পরিবেশ বাঁচানোর জন্য আপ্রান চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা আগের জায়গায় আর ফিরতে পারছে না। বাংলাদেশ না বুঝেই রামপালের মতো পরিবেশ বিধ্বংসী প্রোজেক্ট হাতে নিয়েছে। জাতিসংঘ প্রণীত এসডিজি গোল অনুযায়ী আমাদের পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে। জীববৈচিত্র ধ্বংস করলে প্রাণে স্বত্বি আসে না। আমাদের সুস্থ জীবনের জন্য পরিবেশকে আগের জায়গায় ফিরে যেতে দিন।